Uncategorized

শিশুদের হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়: ১২ টি টিপস

child heat stroke - mylovingkids.com.bd

চলমান হিট এলার্টের কারণে সব বয়সের মানুষের মধ্যে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে। শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে যে কোনো সময় হিট স্ট্রোক ঘটতে পারে।  

তবে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে এই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম শিশুদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।  শিশুদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বয়স্কদের তুলনায় কম হওয়ায় তারা সহজেই হিট স্ট্রোকের শিকার হতে পারে। হিট স্ট্রোক হলে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়, যা শিশুদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে।

তাই আজকের ব্লগে আমরা শিশুদের হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায় সমূহ নিয়ে বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে।  

হিট স্ট্রোক কি?

হিটস্ট্রোক একটি গুরুতর অসুস্থতা , সাধারণত, এটি তখন হয় যখন শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশি হয়ে যায়।   চিকিৎসা বিজ্ঞানে হিটস্ট্রোককে হাইপারথার্মিয়া নামেও অভিহিত করা হয়।

হিট স্ট্রোক কিভাবে ঘটে ?

গরম আবহাওয়ায় খুব বেশি সময় কাটালে অসুস্থ বোধ হতে পারে। এতে শরীর খুব গরম হতে পারে এবং সঠিকভাবে ঠান্ডা হতে পারে না, যা হিট ক্র্যাম্প এবং হিট স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। 

আমাদের মানবদেহে একটি নিয়ন্ত্রিত অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা থাকে, যা আমাদের রক্তকে শরীরে ​​প্রবাহিত করে, অঙ্গগুলি সুস্থ রাখে এবং আমাদের ফিট রাখতে সহায়তা করে। 

আমাদের দেহ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম এবং শীতল হওয়ার জন্য একটি সিস্টেম রয়েছে। যখন এই সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটে, তখন শিশুর শরীরের তাপমাত্রা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি থাকে। শিশুর দেহ যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে অতিরিক্ত উত্তাপ তৈরি করতে শুরু করে এবং শীতল না হয়, তখন এই ঘটনা হিট স্ট্রোক হিসাবে পরিচিত।

হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ: 

হিট স্ট্রোকের লক্ষণ সমূহ হতে পারে:

– পেশীর খিঁচুনি

– অতিরিক্ত ঘাম হওয়া

– তীব্র দুর্বলতা অনুভব করা

– বিভ্রান্তি বা অসতর্ক অবস্থা

– মাথাব্যথা 

– বমি ভাব এবং বমি হওয়া 

– দ্রুত ও অনিয়মিত হৃদস্পন্দন 

– গাঢ় রঙের প্রস্রাব 

– ফ্যাকাশে বা বিবর্ণ ত্বক

এই উপসর্গগুলো অনুভব করলে জরুরীভাবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে ।

হিট স্ট্রোক এর প্রাথমিক চিকিৎসা

যদি আপনি উপরে উল্লেখিত কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত করেন, তবে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অবিলম্বে গ্রহণ করা উচিত:

  • রোগীকে একটি ছায়াময় এবং শীতল স্থানে স্থানান্তর করুন, সম্ভব হলে ঘরের ভেতরে নিয়ে যান।
  • ক্লাস্ট্রোফোবিয়া বা বিভ্রান্তি হ্রাস করতে অতিরিক্ত পোশাক সরিয়ে ফেলুন।
  • রোগীর আশেপাশে ভিড় এড়িয়ে চলুন, একজন পরিচর্যাকারী ব্যক্তিই পর্যাপ্ত হবে।
  • দ্রুত ঠাণ্ডা করার ব্যবস্থা করুন—ঠাণ্ডা ঝরনা, ঠাণ্ডা জল দিয়ে স্পঞ্জিং করে কপাল, গলা, বগলের মতো অংশে ভেজানো তোয়ালে প্রয়োগ করুন।

শিশুদের হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়:

হিটস্ট্রোক থেকে সতর্ক থাকতে সকলের কিছু স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। নিচে কিছু স্বাস্থ্য বিধিমালা দেওয়া হলো: 

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য ১২ টি গ্রীষ্মের টিপস:
  • ঢিলেঢালা, সুতির, হালকা রঙের পোশাক পরুন।
  • ঠান্ডা তরল পান করুন।
  • আপনার শিশুকে ঢিলেঢালা পোশাক পরান।
  • বাইরে গরম থাকলে তাকে বাড়ির ভিতরে রাখুন।
  • শিশুকে পর্যাপ্ত পানি পান করিয়ে হাইড্রেটেড রাখুন।
  • ধীরে ধীরে শিশুকে উষ্ণ বা গরম আবহাওয়ায় অভ্যস্ত হতে দিন, তাড়াহুড়ো করবেন না।
  • ভর-দুপুরে তার বাইরে কাটানোর সময় সীমিত রাখুন।
  • পাখা বা এয়ার কন্ডিশনার যুক্ত ঘরে শিশুকে রাখুন এবং তার পাশে থাকুন।
  • গরমের সময় মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন।

প্রশ্ন – উত্তর : 

কাদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি?

উত্তর

  • শিশু এবং যারা ৬৫ বছরের বেশী বয়সী
  • যারা বিস্তৃত কর্মসূচিতে নিয়োজিত আছেন বা দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের অভিমুখে থাকেন
  • নির্দিষ্ট হার্ট বা ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত রোগী

হিট স্ট্রোক হলে আমি কিভাবে বুঝব?

      উত্তর :

  • প্রচণ্ড গরম অনুভব হওয়া 
  • চরম শারীরিক দুর্বলতা
  • পেশীতে ব্যথা ও সংবেদনশীলতা
  • মাথাব্যথা
  • বমি
  • দ্রুত হার্টবিট

কীভাবে হিট স্ট্রোকের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন? 

উত্তর :

  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন: পানিতে অধিকাংশই মানসিক এবং শারীরিক সমস্যার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি দিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি খান।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: যে কোনও ধরনের ব্যায়াম করা হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। সক্রিয় থাকা আপনার শরীরের সার্কুলেশন বাড়াতে সাহায্য করবে।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন: প্রোটিন যুক্ত খাবার যেমন ফল, সবজি ইত্যাদি আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • ঘুম ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: প্রতিদিন নিয়মিত নিদ্রা নিন। ভালো ঘুম মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য মূলত গুরুত্বপূর্ণ।
  • ধূমপান বন্ধ করুন: ধূমপান থেকে দূরে থাকা অত্যন্ত জরুরি। নিকোটিন শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি সহায়ক, তাই অতিরিক্ত গরমে ধূমপান এড়িয়ে চলুন।

পরিশেষে, গরম আবহাওয়ায় শিশুদের ব্যাপারে অভিভাবকদের সতর্ক থাকা জরুরি। বাহিরের অপ্রয়োজনীয় কার্যকলাপ এড়ানো এবং পর্যাপ্ত পানি পানের মাধ্যমে তাদের হাইড্রেটেড থাকা রাখা প্রয়োজন । 

সাবধানতা অবলম্বন না করলে হিট স্ট্রোক শিশুদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে,  যা শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। তাই শিশুদের হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায় গুলো ভালো করে অনুসরণ করুন এবং হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করুন।  

One thought on “শিশুদের হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়: ১২ টি টিপস

  1. ocean says:

    helpful content.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *